সেনসরি মার্কেটিং | কাস্টমার স্যাটিসফেকশনে যে মার্কেটিং তৈরি করেছে নিজস্বতা

কল্পনা করুন, যে কফিশপের সামনে দিয়ে যাচ্ছেন, এমন সময় ফ্রেশ কফির গন্ধ নাকে এসে লাগল, শরীর মন চাঙ্গা হয়ে উঠল, অবশেষে ঢুকেই পড়লেন, নিজেকে শুধু এক কাপ কফির প্রতিশ্রুতি দিয়ে। কিন্তু ঢুকে শান্ত মনোরম পরিবেশ, সুন্দর আর রুচিশীলভাবে সাজানো সবকিছু আর স্নিগ্ধ হাল্কা মিউজিকে মুগ্ধ হয়ে আপনি কফির সাথে আরো কিছু স্ন্যাকস নিয়ে বসে পড়লেন কিছুটা একান্ত সময় কাটানোর জন্য। এতক্ষণ যে সিনারিওতে আপনি ছিলেন, সেটায় যে ধরনের মার্কেটিং এর কথা বোঝানো হচ্ছে তা হলো সেনসরি মার্কেটিং। সেনসরি মার্কেটিং বর্তমানে মার্কেটিং এর খুব জনপ্রিয় একটা টুল যার সাফল্যের হার বেশ ভালো এবং কাস্টমার ও স্যাটিসফায়েড থাকেন।

সেনসরি মার্কেটিং কী?

নাম থেকেই আসলে অনেকটা বোঝা যায়। তবু ব্যাখ্যা করলে আমরা যা পাই, সেনসরি মার্কেটিং মানুষের পাঁচটি ইন্দ্রিয় অথবা সেন্সকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের পণ্য প্রচার করার একটা পদ্ধতি। মানু্ষের পাঁচটি ইন্দ্রিয় হচ্ছে দেখা, শোনা, স্বাদ নেয়া, স্পর্শ করা ও ঘ্রাণ নেয়া। আমাদের প্রতিদিনের পরিচিত ও ব্যবহৃত বেশিরভাগ পণ্য বা সেবাই কিন্তু মূলত আমাদের ইন্দ্রিয়গুলোকে সার্ভ করে, যেমন- আমরা খাবার খাই স্বাদ ও গন্ধ ভালো হলে, যে মিউজিক শুনতে ভালো লাগে সেটাই শুনি, দেখতে ভালো এবং পরতে আরাম এ ধরনের কাপড়ই পরার জন্য পছন্দ করি। সুতরাং এটাও বলা যায়, সেনসরি মার্কেটিং এর মধ্যে পণ্যের কোয়ালিটিও একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। মানুষ শুধুমাত্র চোখের দেখা ছাড়াও সিদ্ধান্ত নিতে অন্যান্য অনুভূতির উপরও নির্ভর করে। আমাদের ইন্দ্রিয়গুলো ইমোশনের উপর অনেকটাই প্রভাব ফেলে যে কারণে সেনসরি মার্কেটিং এর ফলে ক্রেতা ইমপ্রেসড হয়।

সেনসরি মার্কেটিং

এই মার্কেটিং কীভাবে কাজ করে?

এখনকার দিনে সফল মার্কেটিং এর মূলই হল কাস্টমারের অভিজ্ঞতা, তা ওয়েবসাইট ডিজাইনই হোক বা প্রোডাক্ট ক্রিয়েশন। যদি ইউজারের অভিজ্ঞতা ভালো না হয়, তাহলে তা একেবারেই মূল্যহীন।এই জায়গাতেই সেনসরি মার্কেটিং এর সফলতা। যেহেতু পুরো ব্যাপারটাই কাস্টমারের ভালো অভিজ্ঞতা সৃষ্টির উপর নির্ভর করছে, তাই সেনসরি মার্কেটিং এখানে সফলভাবে খাটে। বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল ব্র‍্যান্ডগুলো অনেকদিন ধরেই সেনসরি মার্কেটিংকে তাদের রেগুলার টেকনিক হিসেবে ব্যবহার করে আসছে এবং এতে সফলতাও পেয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, অ্যাবারক্রম্বি এন্ড ফিচ ও ডাংকিন ডোনাট, এই দুইটি কোম্পানি সাউথ কোরিয়ায় সেনসরি মার্কেটিং পদ্ধতি ব্যবহার করে তাদের সেল প্রায় ২৯% বাড়িয়েছে। সেনসরি মার্কেটিং কাস্টমারকে একটা সম্পূর্ণ অভিজ্ঞতার সুযোগ দেয়। এই কারণে এটা খুব ইউনিক উপায়ে কাস্টমারের মন জয় করে।

চলুন দেখে নেয়া যাক, পাঁচটি সেন্স এর উপর ভিত্তি করে সেনসরি মার্কেটিং এবং তাকে কাজে লাগানোর উপায়।

১) ভিজ্যুয়াল মার্কেটিং

বাংলায় একটা প্রবাদই আছে, “আগে দর্শনধারী পরে গুণবিচারি”। যে ফার্স্ট ইম্প্রেশনকে আমরা সবার আগে গুরুত্ব দেই তার বড় একটা অংশ জুড়ে থাকে ভিজ্যুয়াল ইম্প্রেশন। আমরা যা চোখের সামনে দেখি তা আমাদের মনে বেশ বড় প্রভাব ফেলে, তাই ভিজ্যুয়ালের সাহায্যে মার্কেটিং অনেক আগে থেকেই চলে এসেছে এবং এখনো খুব কার্যকরী একটা উপায়। পোস্টার, ছবি, টাইপোগ্রাফি, পেইন্টিং এসব মাধ্যমে মার্কেটিং অনেক আগে থেকেই চলছে। এ সম্পর্কে একটা উদাহরণ না দিলেই নয়।

পিয়ার্স সোপ ১৮০০ শতকের মাঝের দিকে ভিজ্যুয়াল মার্কেটিং এ একটা বুদ্ধিদীপ্ত পদক্ষেপ নেয়। তারা বিভিন্ন আর্টিস্টদের থেকে পেইন্টিং কেনে, তারপর সেগুলোর মধ্যে মডিফাই করে পিয়ার্স এর সাবান বসিয়ে দেয়। পিয়ার্সকে এজন্য বলা হয় পৃথিবীর প্রথম ব্র‍্যান্ড যারা নিজেদের ব্র‍্যান্ডকে পাবলিকের কাছে প্রমোট করতে ভিজ্যুয়াল মার্কেটিং এর আশ্রয় নিয়েছে।

ভিজ্যুয়াল মার্কেটিং এর মূল থিমই হচ্ছে প্রোডাক্ট এমনভাবে দেখানো যাতে অডিয়েন্স এর মনে প্রভাব ফেলে। মানুষকে কিনতে আগ্রহী করার পিছনে রয়েছে বিজ্ঞান ও আর্টের ব্যবহার।

সাধারণত যেসব উপায়ে ভিজ্যুয়ালকে সেনসরি মার্কেটিং এর অংশ হিসেবে ব্যবহার করা হয়-

রঙ

রঙ আদিকাল থেকেই মানুষের মনকে বিভিন্নভাবে আকৃষ্ট ও প্রভাবিত করে আসছে। তাই বড় বড় ব্র‍্যান্ডগুলো মানুষকে আকর্ষণ করতে বিভিন্নভাবে রঙের ব্যবহার করে থাকে। যেমন- খাবারের ব্র‍্যান্ডে লাল ও কমলা রঙের ব্যবহার বেশি দেখা যায়, কারণ এগুলো মানুষের ক্ষুধার অনুভূতিকে বাড়িয়ে দেয় ও খাবারকে আকর্ষণীয় করে তোলে। এছাড়াও সবুজ রঙ ব্যবহার করা হয় প্রাকৃতিক, অর্গানিক ও হেলদি খাবার বোঝাতে। পোশাক আশাকের ক্ষেত্রে লাল রঙ প্যাশন বোঝাতে ও কালো রঙ ব্যক্তিত্বপূর্ণ বোঝাতে ব্যবহার করা হয়। আপনি নিজের ব্র‍্যান্ড আর প্রোডাক্ট অনুযায়ী রঙ সিলেক্ট করে কাস্টমারদের প্রভাবিত করতে পারেন।

ভিজ্যুয়াল মার্কেটিং

ছবি

মানুষের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য ছবির ব্যবহারও বর্তমানে খুব জনপ্রিয় একটা মার্কেটিং টেকনিক। ব্র‍্যান্ডের বিজ্ঞাপনে যদি প্রোডাক্ট ব্যবহার করা মানুষের ছবি ব্যবহার করা হয়, তাহলে সেটার সেল বাড়ার সম্ভাবনা থাকে, কারণ মানুষ অন্যকে দেখে কিছু করতে পছন্দ করে। এটা তাদের পছন্দের প্রতি ভরসা বাড়ায় এবং সেই প্রোডাক্ট ব্যবহার করা অবস্থায় নিজেকে কেমন লাগবে তার ধারণা দেয়।

কিছু কিছু কোম্পানি বৃহৎ পরিসরেও ছবি ব্যবহার করে, যেমন- প্রকৃতি বা নির্দিষ্ট বস্তু, এতে মানুষ প্রোডাক্টের দিকে আরো বেশি আকৃষ্ট হয়।

লেখা

লেখা কিছু শব্দ প্রাথমিকভাবে হয়ত অতটা গুরুত্বপূর্ণ নাও মনে হতে পারে, কিন্তু এই ধারণা আসলে ভুল। সঠিকভাবে প্রেজেন্ট করা গেলে লেখা ঠিক ততটাই প্রভাব ফেলতে পারে যতটা ফেলবে একটা ইমেজ। এমনকি, লেখাকে সবচেয়ে পুরনো মার্কেটিং এর পদ্ধতি হিসেবে ধরা হয়।

বিজনেসের নাম সম্বলিত সিম্পল একটা সাইন, ব্র‍্যান্ড সম্পর্কে লেখা আর্টিকেল হোক ডিজিটাল ব্লগ বা নিউজপেপার, ব্র‍্যান্ডের নির্দিষ্ট লোগো ইত্যাদি সবই ভিজ্যুয়াল মার্কেটিং এর আওতায় পড়ে। যেকোনো বিজ্ঞাপনের হেডলাইন, ছবির সাথে লেখা, নির্দিষ্ট ফন্টের ব্যবহারের সবই কাস্টমারের মনে প্রভাব ফেলে।

গ্রাফিক্স

বর্তমানে অ্যাডভার্টাইজিং গ্রাফিক্সের ব্যবহার খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ব্র‍্যান্ড আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ইউনিক লোগোর ক্ষেত্রে গ্রাফিক্স ও আর্টের ব্যবহার করা হয়। ইলাস্ট্রেশন, ডায়াগ্রাম, সিম্বল, কম্পিউটার ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার এখন খুব কমন ও মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ভালো রেজাল্ট আনে।

ভিডিও

ছবির পরবর্তী প্রযুক্তি হচ্ছে চলতে থাকা ছবি, যা সাধারণভাবে আমরা সবাই চিনি ভিডিও বলে। টেলিভিশন যখন আবিষ্কার হয়, বিজ্ঞাপনের দুনিয়ায় নতুন মাত্রা এনে দেয় ভিডিও অ্যাডভার্টাইজিং। ভিডিও বর্তমানেও সমানতালে ব্যবহার হচ্ছে, টেলিভিশন এর গন্ডি ছেড়ে মোবাইল ডিভাইস, বিলবোর্ড সবখানে ছড়িয়ে গিয়েছে ভিডিও অ্যাডিভার্টাইজিং।

আলো

কোম্পানির শোরুম বা অ্যাডভার্টাইজিং এ লাইটিং বা আলোর ব্যবহারও কাস্টমারের মনে ভালো প্রভাব ফেলে। যেমন- কিছু কিছু শপে প্রোডাক্ট আকর্ষণীয় করার জন্য বিশেষ ধরনের ওয়ার্ম হোয়াইট লাইটিং ব্যবহার করা হয়। জামাকাপড়ের ব্র‍্যান্ডশপে ট্রায়াল রুমে এমন ধরনের লাইটিং থাকে, যেটায় আপনাকে আকর্ষণীয় দেখাবে। কফিশপ বা কিছু রেস্টুরেন্টে হালকা আলো আর মিউজিকের কম্বিনেশন থাকে যা মানুষকে ওয়েলকাম ফিল করায়।

২) সাউন্ড এর সাহায্যে সেনসরি মার্কেটিং

সাউন্ড এর সাহায্যে সেনসরি মার্কেটিং

১৯২০ এর দিকে সাউন্ড বা শব্দের সাহায্যে মার্কেটিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, কারণ সেই সময়ে রেডিও প্রোগ্রামগুলোর জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। তারপর ধীরে ধীরে রেডিওতে জিঙ্গেল এর প্রবেশ হয়, শব্দের সাথে সুরের সংমিশ্রণ মানুষের মনে পজিটিভ প্রভাব ফেলে। জিঙ্গেল দ্রুতই মানুষের মনে জায়গা করে নেয়, যা ব্র‍্যান্ডগুলো আজও ব্যবহার করে। বর্তমানে রেডিও, টেলিভিশন, স্মার্ট স্পিকার এসব মাধ্যমে অডিও মার্কেটিং চলে। বেশ কিছু টুল এর সাহায্যে অডিও মার্কেটিং করা হয়।

ভয়েসওভার

রেডিও অ্যাডভার্টাইজিং পপুলার হওয়ার পরপরই ভয়েস ওভারের গুরুত্ব বেড়ে যায়। ভয়েসওভার হচ্ছে একজন মানুষ যখন কাস্টমারের মনোযোগ আকর্ষণ করে স্ক্রিপ্টেড বিজ্ঞাপন পড়ে শোনান। সেখানে থাকে প্রোডাক্টের বর্ণনা, উপকারিতা ইত্যাদি। ভয়েস ওভারের গুরুত্ব এতটাই বেশি যে এজন্য বিশেষভাবে সুন্দর ও স্পষ্ট গলার স্বরের মানুষদের নিয়োগ করা হয়।

সাউন্ড এফেক্ট

সাউন্ড এফেক্ট গ্রাফিক্সের মতই কাজ করে। বিভিন্ন মুভি সিনেমা ও টেলিভিশন নাটক শো এর মতই বিজ্ঞাপনেও সাউন্ড এফেক্ট যোগ করে আলাদা মাত্রা সৃষ্টি করা হয়। যেমন- পানির ফোঁটার শব্দ, বৃষ্টির শব্দ, পাখিদের কিচিরমিচির।

থিমেটিক মিউজিক

ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ভিজ্যুয়ালের সাথে থিম অনুযায়ী মিউজিক অডিয়েন্স এর আগ্রহ ধরে রাখতে দারুণ কাজ করে। যেমন- বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির রয়েছে নির্দিষ্ট রিংটোন, যা তারা মোবাইলে ডিফল্ট হিসেবে ব্যবহার করে ও তাদের অ্যাডভার্টাইজমেন্ট ও ক্যাম্পেইনেও শোনা যায়, এতে মানুষ টোন শুনলেই ব্র‍্যান্ড চিনতে পারে।

৩) স্মেলের সাহায্যে মার্কেটিং 

স্মেল মার্কেটিং এ ব্যবহার করা হচ্ছে জিনিসটা ভাবতে একটু অবাক লাগতে পারে, তবে মার্কেটিং এ স্মেল এর গুরুত্ব কোনোভাবেই কম নয়। আমাদের ঘ্রাণ নেবার অনুভূতি মস্তিষ্কের সাথে সরাসরি যুক্ত। ঘ্রাণ এর সাথে আমাদের বিভিন্ন স্মৃতি ও আবেগ-অনুভূতি জড়িয়ে থাকে, তাই আমাদের প্রভাবিত করতে পারে খুব দ্রুতই।

স্মেলিং সেন্সকে মাথায় রেখে বেশ কয়েকভাবেই মার্কেটিং করা যায়।

স্মেল সেনসরি মার্কেটিং

ন্যাচারাল স্মেল

কিছু কিছু ব্র‍্যান্ড বা শপ তাদের দোকানে ন্যাচারাল স্মেল ব্যবহার করে, যাতে কাস্টমার আকৃষ্ট হয় ও বেশি সময় কাটায়।

সুগন্ধি

মার্কেটিং টুল হিসেবে সুগন্ধির ব্যবহার নতুন নয়, প্রায়ই হচ্ছে। ম্যাগাজিনে সুগন্ধির স্যাম্পল দেয়া, কসমেটিকস বিশেষ করে লিপস্টিকে চকলেট বা মিষ্টি সুগন্ধির ব্যবহার কাস্টমারকে সেই বিশেষ কসমেটিক বা প্রোডাক্ট কিনতে আকৃষ্ট করে।

খাবারের স্মেল

কথায় আছে, “ঘ্রাণেই অর্ধেক ভোজন”। এটিকে মাথায় রেখে ঘ্রাণের সাহায্যে খাবারের মার্কেটিং বা সেল চলে আসছে বহু বছর ধরে। হটডগ বা ফাস্টফুড কার্ট, বেকারি, কফি এসব পণ্যে এই মার্কেটিং খুব দেখা যায়। একদম স্ট্রীট ভেন্ডরদের কার্টেও এ মার্কেটিং দেখা যায়, আবার অনেক বড় বড় রেস্টুরেন্টের ওপেন কিচেন কনসেপ্টেও দেখা যায়।

৪) স্পর্শের সাহয্যে মার্কেটিং 

এটাকে মার্কেটিং ট্যাকটিক এর সাথে এক নজরে নাও দেখা হতে পারে, তবে ক্রেতারা ডিসিশন নিতে কিন্তু স্পর্শের ভূমিকা কম নয়।

কিছু কিছু পণ্য ক্রেতারা কেনার আগে টেস্ট করে দেখতে চান, তা হোক কসমেটিকস বা ফোনের মত পণ্য। এইক্ষেত্রে টাচ- মার্কেটিং কাজে আসতে পারে। টাচ মার্কেটিং যেভাবে যেভাবে কাজে লাগানো যায় তা সম্পর্কে নিচে দুটি কথা থাকলো।

কমফোর্ট বা আরাম

বিভিন্ন ফার্ণিচারের ব্র‍্যান্ডশপে ফার্ণিচার সাজিয়ে রাখা থাকে, যাতে কাস্টমার বসে বা শুয়ে দেখতে পারেন। পোশাকের শপে চেঞ্জিং রুম থাকে, যাতে কাস্টমাররা পোশাকটি তাকে মানানোর সাথে সাথে আরামদায়ক কিনা, তাও দেখতে পারেন।

স্যাম্পল

বিভিন্ন কসমেটিক শপ, মেকআপ ব্র‍্যান্ড ক্রেতাকে ফ্রি স্যাম্পল অফার করে, যাতে ক্রেতা সেটা ব্যবহার করে দেখতে পারেন তার ত্বকের সাথে যাচ্ছে কিনা, আরামদায়ক কিনা, স্যুট করছে বা রিয়্যাকশন দিচ্ছে কিনা।

৫) স্বাদের সাহায্যে মার্কেটিং 

সেনসরি মার্কেটিং

স্বাদ আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অনুভূতি, যা মার্কেটিং এ বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগানো যায়। স্বাদের সাথে ক্ষুধা তৃষ্ণার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। স্বাদ-গন্ধ একইসাথে কাজ করে। তবে স্বাদকে ভিত্তি করে মার্কেটিং একটু রিস্কি, কারণ সব ক্রেতা সব ধরনের স্বাদ পছন্দ করেন না। তাই স্বাদের ভিত্তিতে যেমন- প্রোডাক্ট সেল হুড়হুড় করে বাড়তে পারে, তেমনই নেমেও যেতে পারে।

স্বাদকে কাজে লাগিয়ে বেশ কয়েকভাবেই মার্কেটিং স্ট্র‍্যাটেজি নেয়া যায়।

স্যাম্পল

স্বাদকে কাজে লাগিয়ে মার্কেটিং এর সবচেয়ে কমন হচ্ছে স্যাম্পল অফার। আমরা প্রায়ই কয়েক স্বাদের খাবারের মধ্যে কনফিউজ হয়ে গেলে অল্প অল্প পরিমাণে নিয়ে পরে পছন্দের স্বাদের খাবারই নিই। অনেক কোম্পানি ফ্রি স্যাম্পল অথবা অল্প দামে ছোট ছোট স্যাম্পল প্যাক অফার করে, যা টেস্ট মার্কেটিং হিসেবেই করা হয়।

ভিন্ন ভিন্ন ফ্লেভার

ওরিও কে না চেনে, বিশ্ববিখ্যাত চকলেট এর মাঝে ক্রিম দেয়া স্যান্ডউইচ কুকি। বেসিক ফ্লেভারের ওরিও সাফল্য পাবার পর ওরিওর সারাবিশ্বে ৮৫ এরও বেশি ফ্লেভার রিলিজ করা হয়েছে। এভাবে নতুন নতুন ফ্লেভার নিয়ে এসে ভিন্ন ভিন্ন কাস্টমারদের কাছে পৌছাতে সক্ষম হয়েছে ওরিও, যে কারণে এখনো ওরিও এত বেশি জনপ্রিয়।

মানুষ তার বেসিক সেন্স এর উপর অনেক বেশি নির্ভর করে, তাই সেনসরি মার্কেটিং ঠিকভাবে করতে পারলে তা ক্রেতার উপর বেশ ভালো প্রভাব ফেলে এবং এই ডিফারেন্ট টেকনিক হতে পারে আপনার ব্যবসার মেকিং পয়েন্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *