শিল্প সবসময়ই মানব মুক্তির অন্যতম হাতিয়ার। মানুষ যখন গুহায় বাস করতো, উন্নত পৃথিবীর স্বপ্নে বিভোর থাকা যখন তাদের কল্পনারও বাইরে, তখনো তারা গুহার গায়ে চিত্রকর্ম করে রাখত নিজেদের ভাষা, সংস্কৃতি পরবর্তী পৃথিবীতে জানান দেয়ার উদ্দেশ্যে। ঠিক তেমনই যুগ যুগ ধরে তিব্বত থেকে ছড়িয়ে পড়া মান্ডালা শিল্প চর্চা হচ্ছে পৃথিবী ও প্রকৃতির গুরুত্বপূর্ণ সব প্রতীকী উপস্থাপনে। এই মনোযোগী শিল্প হয়ে উঠেছে এই মুহূর্তে হয়ে উঠেছে মানসিক অবসাদ ও মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার অন্যতম সহায়ক। মান্ডালা আর্ট কীভাবে মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভূমিকা রাখে সেটিই আজ আমরা আলোচনা করবো।
মান্ডালা আর্ট এর শুরু যেভাবে
মূলত তিব্বত অঞ্চলে আবিষ্কৃত এই মান্ডালা আর্ট। মান্ডালা শব্দটি মূলত সংস্কৃত শব্দ থেকে আবির্ভূত। যার অর্থ হলো বৃত্ত। এই বৃত্ত দিয়ে আঁকার মাধ্যমে পৃথিবীর ও মহাবিশ্বের ভিতরকার প্রতীকীগুলোকে তুলে ধরা হতো। মান্ডালা আর্টের আরো একটি বড় পরিচয় হলো, এই আর্ট ধর্মীয় সংস্কৃতির শান্তিচর্চা প্রকাশের একটা মাধ্যম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলো। মান্ডালা আর্ট সাধারণত তান্ত্রিক বৌদ্ধরা ধ্যানের সহায়তার জন্য ব্যবহার করতেন, যা এখনো করা হয়। যুগের পর যুগ এই চর্চা ভারত, চীন, জাপান, তিব্বত থেকে পশ্চিমা দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে মান্ডালা আর্ট একটি শক্তিশালী আর্ট থেরাপির কৌশল হিসেবে বিবেচিত।
কারা ও কেন মান্ডালা তৈরি করেন?
বৌদ্ধ সন্নাসীদের হাত ধরেই মান্ডালা চিত্রকর্মের উদ্ভব। মান্ডালা মেডিটেশনের জন্য একটি অতি কার্যকর পদক্ষেপ বলা যায়। এর মাধ্যমে মন একটি নির্দিষ্ট জায়গায় মনোযোগ স্থাপন করতে পারে। একই প্যাটার্নে মনকে কেন্দ্রীভূত করতে করতে এমন একটা অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়, যখন এর বাইরে আর কোনো ভাবনা মনে প্রবেশ করতে পারে না। মান্ডালাকে মনের মধ্যে এমনভাবে গেঁথে নেওয়া হয়, যেন এর প্রতিটা ছোট ছোট বিষয়গুলোও মনের মধ্যে বিশ্লেষণ করা যায়। মান্ডালার মধ্যে নিজ সত্তাকে ছুঁয়ে ফেলে বলা যায়। বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের মতে, মান্ডালা তাদের তান্ত্রিক যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। নবিশ সন্ন্যাসীদের শেখানো হয়, মান্ডালা কীভাবে আঁকতে হবে, কীভাবে সেটি উপস্থাপন করতে হবে এবং আচার-অনুষ্ঠানের সময় কখন কোন মন্ত্র জপ পড়তে হবে।
তারা মান্ডালাকে বিশুদ্ধতা হিসেবে বিবেচনা করেন। তারা বিশ্বাস করেন, এই বিশুদ্ধতাকে মনে ধারণ করতে পারলেই নিজেকে শুদ্ধ করে নিজের সফলতার চূড়ায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। মানুষ যেমন বাইরের জগৎ থেকে নানাভাবে পথভ্রষ্ট বা ভুলপথে পরিচালিত হয়, তার মনও তার মধ্যে নানারকমের বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। আর এই বিভ্রান্তি থেকে মনকে সুরক্ষা দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছু কিছু তান্ত্রিক মান্ডালায় পার্থিব জগৎ থেকে সুরক্ষা ও বিচ্ছিন্নতাকে বিমূর্তভাবে চিত্রায়িত করা হয় চারটি আবরণী চক্রের মাধ্যমে- অগ্নি চক্র, বজ্র চক্র, অষ্ট মন্দির চক্র এবং পদ্ম চক্র। অর্থাৎ জ্ঞান, বিশ্লেষণ, প্রয়োগ ও মুক্তি। এই চার চক্রের মাধ্যমে সব বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব বলেই তারা মানেন।
শুধুমাত্র মনই নয়, বাহ্যিক আচার ও আচরণকে এক জায়গায় স্থিরতা ও প্রসিদ্ধতায় নিয়ে আসার জন্যও মান্ডালা গুরুত্বপূর্ণ। এই চার চক্রের মাঝখানে নানা রকমের চতুর্ভুজ ও বৃত্তকে এক বা সন্নিবেশিত করে এক মনস্তাত্ত্বিক প্রক্রিয়া সৃষ্টি করা হয়, যেখান থেকে যেই সাধক মান্ডালাটি করছিলেন তিনি বুদ্ধত্ব লাভের পথে এগিয়ে যাবে। তান্ত্রিক বৌদ্ধ মতবাদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, তাদের অনেক আচার মান্ডালার ওপরে অনেকাংশেই নির্ভর করে। এমনকি যেখানে বস্তুগত মান্ডালা উপস্থাপন করা হয় না, সেখানেও মননের মাঝে মান্ডালা সৃষ্টি করাই একজন সাধকের ধ্যানের পদ্ধতি। তিব্বতি বৌদ্ধরা আবার মান্ডালাকে বিশ্বজগতের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করেন। তাদের মান্ডালার প্রতিটা খুঁটিনাটি প্রাচীন ঐতিহ্য অনুসরণ করে তৈরি করা এবং আলাদা আলাদা অর্থ বহন করে।
এমনকি একই প্রতীকের একাধিক অর্থও হতে পারে। তান্ত্রিক বৌদ্ধদের মান্ডালা যেখানে পার্থিব জগৎ থেকে মুক্তিলাভ করে বোধিলাভের কথা বলে, তিব্বতি মান্ডালা সেখানে বিশ্বজগতের কাছে বিলীন হওয়ার পথ দেখায়। মনজাগতিক পথে পৃথিবীর বাইরের কোনো জগতে নিয়ে যায়। আবার বজ্রযান মতাবলম্বীরা তন্ত্রসাধনা শুরুর আগে একজন নবিশ সাধককে দিয়ে দশ হাজারের বেশি মান্ডালা এঁকে থাকেন।
আঁকা শেষে বালু দিয়ে তৈরি এই মান্ডালা আবার মুছে ফেলা হয়। মহাবিশ্বের কোনো কিছুই যেমন চিরস্থায়ী না তেমন মনোভাব থেকে তৈরি হয় বালুর তৈরি এই মান্ডালা। আবার এত কষ্ট করে তৈরি করা এই মান্ডালা মুছে ফেলার মধ্য দিয়ে শিক্ষা দেওয়া হয় দুঃখ নিরাময় পদ্ধতি হবে বালুর মতো। বালু যেমন কোনো আকৃতি ধারণ করে না, মনও হবে সে রকম। কোনো দুঃখই চিরস্থায়ী হবে না মননে।
মান্ডালার প্রকারভেদ
প্রধানত মান্ডালার সবগুলো ভাগকে তিনভাগে নিয়ে আসা যায়। যথা-
১) টিচিং মান্ডালা
২) হিলিং মান্ডালা
৩) স্যান্ড মান্ডালা
এবার এগুলোকে ভেঙে বিস্তারিত আলাপে গেলে অনেক রকমের মান্ডালাই খুঁজে পাওয়া যায়।
বর্তমান মতাদর্শ থেকে সেভাবে প্রাধান্য না দেয়া হলেও এটাই সত্যি যে, বিশ্বের বেশিরভাগ প্রাচীন শিল্পই বেড়ে উঠেছে কোনো একটি ধর্মের হাত ধরেই। বহুকাল ধরে সংস্কৃতি ও ধর্মে পৃথকভাবে গুরুত্ব পেয়ে এসেছে এই শিল্প। তাই অনেক ধরন থাকলেও মান্ডালার কিছু কিছু ফর্ম শিল্পে উল্লেখযোগ্য হিসেবে স্থান পেয়েছে। সেগুলো হচ্ছে-
জ্যামিতিক মান্ডালা
মান্ডালা বলতে প্রথমেই সবার মনে যা ভেসে ওঠে তা হলো অনেকগুলো জ্যামিতিক আঁকিবুঁকি। এটিই মূলত জ্যামিতিক মান্ডালা। যেকোনো মান্ডালা আঁকতে গেলেই জ্যামিতিক মান্ডালাকে প্রাথমিকভাবে ব্যবহার করতে হয়। এই ধরনের মান্ডালায় প্রাথমিকভাবে ব্যবহৃত হয়– রেখা, জ্যামিতিক আকৃতি এবং অন্যান্য কিছু। বাচ্চাদের রঙিন বইয়ে বা ডুডল (এক ধরনের আর্ট ফর্ম) রঙ করার জন্যও অনেক ক্ষেত্রে জ্যামিতিক মান্ডালা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
আর্কিটেকচারাল মান্ডালা
আর্কিটেকচারে আর্ট ব্যবহার করা ইদানীংকালের কোনো চর্চা নয়, মুসলিম শাসকদের মধ্যে বেশ অনেকবছর ধরেই এই প্রবণতা দেখা যায়। আর্টের বেশ বড় একটি অংশ নিয়েই পড়া হয় এই স্থাপত্যশিল্প নিয়ে। যার উৎসই ছিলো বৌদ্ধদের আবিষ্কৃত এই মান্ডালা ফর্ম। এ ধরনের মান্ডালায় ছোটবড় রেখা এবং কারুকাজের মাধ্যমে স্থাপত্যের আকৃতি ফুটে ওঠে। অনেক ক্ষেত্রেই ভাস্কর্যের মতো ত্রিমাত্রিকতা ফুটিয়ে তোলা হয়।
ভৌগোলিক বা কসমোলজিক্যাল মান্ডালা
ভৌগোলিক বা কসমোলজিক্যাল মান্ডালায় কোনো স্থান বা রাজাদের নাম বা প্রভাবানুসারে আকার এবং আকৃতি আঁকা হয়ে থাকে। কোনো চিহ্ন, প্রতীক, নকশা, দেবদেবীর ছবি, স্থান এবং মহাজাগতিক বিষয়গুলো ফুটে ওঠে এই মান্ডালায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চতুর্ভুজ আঁকা হয়ে থাকে। আধ্যাত্মিকতায় চতুর্ভুজ কাঠামো, ভারসাম্য, যুক্তি ও শৃঙ্খলাকে উপস্থাপন করে।
বর্ণ মান্ডালা
বর্ণ মান্ডালায় মূলত প্রাধান্য পায় বর্ণ বা বর্ণের মতো কোনো প্যাটার্ন। দেবদেবীর উদ্দেশে কোনো বিশেষ ভাষা বা ভাষার বর্ণ ব্যবহার করে এই মান্ডালা আঁকা হয়ে থাকে। এই মান্ডালায় বর্ণ বদলে কোনো বিশেষ চিহ্ন বা প্রতীক ব্যবহার করা হলে তাকে বলা হয় প্রতীক মান্ডালা।
আবার আর্টফর্মে কীভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে তার ওপরে ভিত্তি করে মান্ডালাকে পাঁচটি পৃথকভাবে ভাগ করা হয়।
স্ক্রল মান্ডালা
ছবি আঁকায় বা টেক্সটাইলে এই মান্ডালা অনেকবেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কাগজে বা কাপড়ে ছোট ছোট তুলির মাধ্যমে বিস্তারিত খুঁটিনাটি আঁকা হয়ে থাকে এই মান্ডালায়। আঁকাটিকে গুটিয়ে রাখা হয় বলে একে স্ক্রল মান্ডালা বলা হয়ে থাকে। গুটিয়ে রাখার সুবিধা মাথায় রেখেই এই মান্ডালাগুলো আঁকা হয়। স্থায়ীভাবে প্রদর্শনের জন্য কিছু মান্ডালা ট্যাপেস্ট্রির মতো করে ধর্মীয় মন্দিরে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
ফুলেল মান্ডালা
ফুলকে মূল ফর্মে রেখে ফুলেল মান্ডালা আঁকা হয়ে থাকে। ফুলের পাপড়ির রয়েছে বিশেষ রকম অর্থ। পুনর্জন্ম, আত্মার শাশ্বত জীবন, আধ্যাত্মিক উন্নতি, আত্মানুরাগ, ভারসাম্য এবং অন্যান্য অনেক কিছুই উঠে আসে পাপড়ির রূপকের মাধ্যমে। মনোমুগ্ধকর উপকরণ হিসেবে সাধারণ মানুষের জন্য যে কোনো ফুল মান্ডালায় যোগ করতে পারে আলাদা রকম সৌন্দর্য।
ম্যুরাল মান্ডালা
ধর্মীয় মন্দিরে, বাসাবাড়িতে, পথের ধারে আঁকার জন্য এই মান্ডালা ব্যবহৃত হয়। আগেকার দিনে ফ্রেস্কো-সেকো রীতিতে আঁকা হয়েছিলো এই মান্ডালাগুলো। কিন্তু বর্তমানে ম্যুরাল আঁকার ক্ষেত্রে স্প্রে পেইন্টিং, আলপনা বা অন্যান্য আধুনিক মাধ্যম ব্যবহৃত হচ্ছে।
সুতোর মান্ডালা
এই মান্ডালার মূল ফ্রেম বানানো হয় চিকন কাঠের টুকরো দিয়ে। কাঠের এই টুকরোগুলো জুড়ে চলে সুতোর প্যাঁচে বেধে মান্ডালা তৈরির কাজ। শুধু প্যাঁচ করে বেধে যাওয়াই নয়, বরং জ্যামিতিক আকৃতিকে মাথায় রেখেই এই মান্ডালা তৈরি করা হয়। এই মান্ডালা তৈরির কাজটা সহজ বলে বাচ্চাদের কাছে তা ভীষণ জনপ্রিয়।
সিরামিক মান্ডালা
এই ধরনের মান্ডালা সচরাচর চর্চিত নয়। মূলত সিরামিকের ওপরে দেবদেবীর সঙ্গে বিভিন্ন আকৃতি এঁকে এই মান্ডালাগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়।
মান্ডালা আর্ট ও মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক
মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে মান্ডালা আর্টের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মনোবিজ্ঞানী কার্ল ইয়ুং মান্ডালা আর্টকে ‘অবচেতন মনের প্রতিনিধিত্বকারী’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। ২০০৫ সালে তিনি এই পদ্ধতিকে মানসিক চিকিৎসার অন্তর্ভুক্তকরণে উদ্যোগ নেন। তাই দিনের পর দিন সাইকো অ্যানালাইসিসে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল। বর্তমানে মানসিক যন্ত্রণা উন্নয়নে বিভিন্ন মনোবৈজ্ঞানিক কৌশল ও তত্ত্বের সঙ্গে মান্ডালা আর্ট ব্যবহার করা হয়, যেমন- আর্টভিত্তিক কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি (এসিবিটি), আর্টভিত্তিক মাইন্ডফুলনেস (ডিবিটি), আর্টভিত্তিক মানসিক আঘাত–পরবর্তী চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা, আর্টভিত্তিক শিথিলায়ন ইত্যাদি।
কোন কোন মানসিক সমস্যা উন্নয়নে মান্ডালা আর্ট ভালো কাজ করে?
বিভিন্ন গবেষণার প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায় যে মান্ডালা আর্ট মানসিক চাপ, রক্তচাপ, হতাশা ও অস্থিরতা কমাতে যেমন কাজ করে, ঠিক তেমনি ঘুম ভালো হতে, মনোযোগ বৃদ্ধিতে, সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে ও মাদকাসক্ত চিকিৎসায় ভালো ফল দেয়। এছাড়া বাচ্চাদের অস্থিরতা কমাতে ও ক্যান্সার রোগীর জন্য মান্ডালা আর্ট থেরাপি ভালো কাজ করে বলে অনেক গবেষকেরা মত দিয়েছেন।
সাধারণ মানুষের কাছে মান্ডালা শিল্প যেমন
যেহেতু মান্ডালার কিছু কিছু প্রকার বা পদ্ধতি অত্যন্ত আধ্যাত্মিক এবং ধর্মীয় অনুশীলনের অংশ, তাই এটি জনসাধারণের কাছে কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা পায় বা পাচ্ছে সেটিও একটি আলোচনার বিষয়। বর্তমানে সাধারণ মানুষের হাতে চলে এসেছে মান্ডালা। মান্ডালা আঁকার জন্য খুব জটিল কিছুর প্রয়োজন নেই। আনন্দের জন্য মানুষ মান্ডালা আঁকে। মান্ডালা আঁকার জন্য দরকার ধৈর্য, নিজেকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা এবং মনোযোগ। এই তিনটি বিষয় মাথায় রাখলেই যে কেউ এঁকে ফেলতে পারবে দারুণ কোনো মান্ডালা। এর মাধ্যমে শুধু আঁকাই হবে না, মানসিক অবসাদ, বিষণ্ণতাকে একপাশে ফেলে যে কেউ হয়ে উঠবে স্নিগ্ধ মনের অধিকারী।
মান্ডালার সরঞ্জামাদি
রঙিন মান্ডালা আঁকতে গেলে প্রয়োজন রঙিন পেনসিল বা কলম, স্কেচের উপযোগী কলম ও রঙ। ডিজিটাল বা ক্যানভাসে, কাগজে বা কাপড়ে, তেল রঙ, জল রঙ বা অ্যাক্রেলিক যেকোনো মাধ্যমে মান্ডালা আঁকা সম্ভব। দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততা হতাশাকে দূরে ঠেলে এটি মানুষকে সতেজতা দান করে। জ্যামিতিক মান্ডালা দিয়ে আঁকা শুরু করলে মান্ডালার মূল সুর বুঝতে পারা সহজ হয় যে কারও জন্য।
ব্যস্ত জীবনে এই এক টুকরো শিল্পের চর্চা আপনাকে এনে দিতে পারে অদ্ভুত এক মানসিক প্রশান্তি। আঁকা শেষ হলে রঙিন যেকোনো মান্ডালা দেখে আপনার চোখ জুড়িয়ে যাবে, মন ভরে যাওয়া অনুভূতি দেবে। যেকোনো চক্রাকার আর্ট ফর্মই মান্ডালা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। কাজেই মান্ডালা আঁকতে গেলে কেবল আঁকিবুঁকি করতে জানলেই চলবে। তবে দক্ষ হয়ে উঠতে গেলে প্রয়োজন নিয়মিত চর্চা। অন্যান্য শিল্পের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। মান্ডালা আঁকা শুরু করার জন্য খুব বেশি দক্ষতার দরকার হয় না। তবে মান্ডালা তার সাধারণ বৈশিষ্ট্যের মাঝেই ফুটে ওঠে অসাধারণ হয়ে। কাগজের টুকরোয় নিজেকে মেলে দেওয়ার অন্যতম উপায় হয়ে উঠতে পারে মান্ডালা।