মার্কেটিং পলিসি সঠিকভাবে কাজ করছে তো? জেনে নিন কেপিআই দিয়ে!  

ব্যবসার উন্নতির জন্য বিভিন্ন মার্কেটিং পলিসি ফলো করে চলছেন, ভিন্ন ভিন্নভাবে ক্রেতা টানার চেষ্টা করছেন, কিন্তু কাজ হচ্ছে কতটুকু কীভাবে বুঝবেন? কোন পলিসি সফল হচ্ছে আর কোন পলিসি কাজ করছে না সেটাই বা বোঝার উপায় কি? কেপিআই এর সাহায্যে এগুলো সহজে জানা যাবে। চলুন আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিই কেপিআই এর সাথে।

কেপিআই কী?

কেপিআই (KPI) হচ্ছে key performance indicator অর্থাৎ দীর্ঘমেয়াদি পারফরম্যান্স বোঝার জন্য ব্যবহৃত কিছু কৌশল। এটি পরীক্ষামূলকভাবে কোনোকিছু মেপে তার উপর হিসাব করে একটা নির্ভরযোগ্য ফলাফল দেয়। প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এটা খুব কার্যকর। মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ইন্ডিকেটরগুলো হতে পারে ওয়েবসাইটে নতুন ভিজিটর, ইনভেস্টমেন্ট রিটার্ন, কাস্টমার ফিডব্যাক ইত্যাদি।

মার্কেটিং পলিসি ঠিক রাখতে কেপিআই

মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে যেসব কেপিআই এর দিকে আমাদের নজর রাখতে হবে সেগুলো হলো—

১) কাস্টমার একুইজিশন কস্ট

কাস্টমার একুইজিশন কস্ট বলতে বোঝায় একজন সম্ভাব্য ক্রেতা কী কী করলে আমাদের পণ্য কিনবেন তার খরচ। এই মেট্রিকের সাহায্যে মার্কেটিং এর পলিসি ডেভেলপ হয় এবং আপনি বাজেট ঠিক করতে পারবেন। যেমন- আমরা উদাহরণ হিসেবে একটা সিনারিও দিতে পারি। ধরুন, আপনার দোকানে আপনি ৫০% ছাড় দিলেন। এই ছাড়ে আপনি যে ক্রেতা পাবেন, পরবর্তীতে ছাড় না থাকলে সেই ক্রেতা নাও আসতে পারে। এককালীন লাভের চেষ্টা করলেও এই ছাড়ে আসলে আপনার ক্ষতিই হবে। কিন্তু আপনার সম্ভাব্য ক্রেতা থেকে ক্রেতা বাড়বে না। তাই, এই ইন্ডিকেটর বোঝাবে, ব্যবসার লাভের জন্য আপনার ঠিক কতটুকু খরচ ক্রেতার জন্য করতে হবে।

কেপিআই এর একটি ইন্ডিকেটর কাস্টমার অ্যাকুইজিশন কস্ট

২) মার্কেটিং আরওআই (ROI-রিটার্ন অব ইনভেস্টমেন্ট)

এটার দ্বারা মূলত বোঝানো হচ্ছে আপনার মার্কেটিং এর ইনভেস্টমেন্ট থেকে কতটুকু ফেরত এলো বা উসুল হলো। সমীকরণের মাধ্যমেও এটাকে দেখানো যায়।

(সেলস হতে পাওয়া লাভ – মার্কেটিং কস্ট)/মার্কেটিং কস্ট = রিটার্ন অব ইনভেস্টমেন্ট

ROI হিসাব করলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার মার্কেটিং ক্যাম্পেইন কতটা ফলপ্রসূ হচ্ছে বা আপনার মার্কেটিং এর সিস্টেম আসলে কতটা কাজ করছে। প্রয়োজনে আপনি আপনার মার্কেটিং স্ট্র‍্যাটেজি পরিবর্তনও করতে পারবেন।

৩) ট্রাফিক টু মার্কেটিং কোয়ালিফাইড লিড রেশিও

এটার ইংরেজি টার্মটা একটু খটমটে, তবে সহজ ভাষায় বলতে গেলে এটা হচ্ছে একটা প্লাটফর্ম কতটা ট্রাফিক জেনারেট করছে আর সেই ট্রাফিক থেকে কতটুকু কার্যকর সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে সেটার অনুপাত। উদাহরণ দেয়া যায় এভাবে। মনে করি, একটি প্রোডাক্টের মার্কেটিং করা হচ্ছে ফেসবুকে বুস্ট করে, বুস্ট থেকে প্রচুর সাড়া আসছে, যেটাকে আমরা ধরব ট্রাফিক। আর সেই সাড়া থেকে আসলে কতজন ক্রেতা বা সম্ভাব্য ক্রেতা যোগাযোগ করছেন সেটা হলো কোয়ালিফাইড লিড রেশিও। এই তথ্য অ্যানালাইজ করলে আপনি বুঝতে পারবেন, কোন প্লাটফর্মে আপনার বিজনেস ভালো চলছে আর কোনটায় চলছে না। তখন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

৪) অর্গানিক ট্রাফিক

যারা মূলত সোশ্যাল মিডিয়া কমার্স, এফ কমার্স বা ফেসবুক কমার্স যেটাকে বলে তার সাথে যুক্ত আছেন, অর্গানিক রিচ বা ট্রাফিক শব্দটা তাদের অতি পরিচিত। অর্গানিক রিচ বা ট্রাফিক হচ্ছে কোনোরকম পেইড প্রমোশন, অ্যাড সার্ভিস বা বুস্টিং ছাড়াই শুধুমাত্র কন্টেন্টের মাধ্যমে যতটুকু রিচ পাবেন সেটা। অর্গানিক রিচে ব্যবহার করা হয় কী ওয়ার্ড, কোয়ালিটিফুল কন্টেন্ট ইত্যাদি। আপনার বিজনেস শুধু কন্টেন্ট বেসিসে ভালো রিচ পাচ্ছে মানে অর্গানিক ট্রাফিক ভালো কাজ করছে। অর্গানিক ট্রাফিক ভালোভাবে চলতে প্রায় ৬-১২ মাস সময় নেয়, তবে একবার সেট হয়ে গেলে সেটা বিজনেসকে ভালো এগোতে সাহায্য করে।

অর্গানিক ট্রাফিক

৫) সোশ্যাল মিডিয়া এনগেজমেন্ট

আগের টপিকে যখন এফ-কমার্সের কথা এসেই পড়েছে এখানে তাহলে অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াগুলোকে নিয়েও কথা বলা যাক। সোশ্যাল মিডিয়া মানে শুধু ফেসবুক নয়, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম, ডিসকর্ড ইত্যাদিও আছে। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্বকে ফলোয়ার দিয়ে মেপে ভুল করেন। আসলে খেয়াল করতে হবে ফলোয়ারদের এনগেজমেন্ট। মানে কতজন ইন্টার‍্যাক্ট করছেন, কতজন অর্ডার করছেন বা ডিটেইলস জানতে চাইছেন এই ব্যাপারে।

উদাহরণ দিয়ে বুঝাই, একটা ইন্সটাগ্রাম পেজ এর ফলোয়ার হয়ত ১ লক্ষের কাছাকাছি, কিন্তু ক্রেতাদের সাড়া কম, বিক্রিও হয় কম। অন্য আরেকটা পেজে ফলোয়ার তার অর্ধেক, কিন্তু এনগেজমেন্ট আর বিক্রির হার দ্বিগুণ। এমন উদাহরণ আমাদের সামনে অনেক আছে।

কাস্টমার এনগেজমেন্ট আমাদের বলে আমাদের মার্কেটিং টেকনিক কতটা কাজ করছে। তাই সোশ্যাল মিডিয়া এনগেজমেন্ট একটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ইন্ডিকেটর।

৬) সেলস টিম রেসপন্স টাইম

আপনারা যারা অনলাইনে শপিং করেন, তারা নিশ্চয়ই এ জিনিসটা একবার হলেও ফেস করেছেন, যে কোনো পণ্য পছন্দ হলো, শপে ইনবক্স করলেন কিন্তু রেসপন্স নেই কোনো। জিনিসটা বিরক্তিকর, তাই না? আপনার আমার জন্য যেমন এটা বিরক্তিকর, শপের জন্য তেমনই ক্ষতিকর।  এজন্য সেলার টিম রেসপন্স টাইম মাপা হলো আরেকটা গুড ইন্ডিকেটর। এফ কমার্স বা বিভিন্ন ই কমার্স সাইটে রেসপন্স রেট প্রায়ই শো করা থাকে যেমন “টিপিক্যালি রেস্পন্সেস ইন __ মিনিট” । রেসপন্স টাইম যদি বেশি হয় তাহলে ক্রেতা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং অনেক সম্ভাব্য ক্রেতা বিকল্প খুঁজে নেয়। এ কারণে এটি রেকর্ড করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইন্ডিকেটর। রেসপন্স টাইম কমিয়ে আনা এবং সার্ভিস দ্রুত করার মাধ্যমে আপনার বিজনেস এগিয়ে যেতে পারবে। এটা একটা ভালো মার্কেটিং স্ট্র‍্যাটেজিও।

৭) মার্কেটিং কোয়ালিফাইড লিড (MQL)

মার্কেটিং কোয়ালিফাইড লিড হচ্ছে এমন সব লিড যারা মার্কেটিং এ সাড়া দিয়ে এনগেজ বাড়ায়। মূলত এটা বলা যায় ক্রেতা বা ফলোয়ারদের হিসাব। এই কেপিআই দিয়ে বোঝা যায় আপনার মার্কেটিং পদ্ধতি আসলেই কাজ করছে কিনা বা কত পার্সেন্ট কাজ করছে। মার্কেটিং এ আকৃষ্ট হয়ে গ্রাহক বিভিন্ন কাজ করেন। যেমন পণ্য “এড টু কার্ট” করা বা কার্টে তোলা, ফর্ম বা নিউজলেটারে নিজের কন্টাক্ট ইনফরমেশন দেয়া, বেটা বা টেস্টিং ট্রায়াল পর্যায়ের সফটওয়্যার ইন্সটল করা ইত্যাদি। এর দ্বারা বোঝা যায়, আপনার অফার করা সেবা বা পণ্য নিতে ক্রেতা কতটা আগ্রহী। এ থেকে এটাও বোঝা যায় মার্কেটিং টিম আসলে কত পার্সেন্ট ক্রেতা তৈরি করতে পারছে।

MQL

৮) সেলস কোয়ালিফাইড লিড (SQL)

মার্কেটিং কোয়ালিফাইড লিড যখন ঠিকভাবে কাজ করে এবং এ থেকে আসলেই সেল আসে, তখন এটাকে ধরা হয় সেলস কোয়ালিফাইড লিড। মার্কেটিং এর মতই, সেলস কোয়ালিফাইড লিড মানে বোঝায়, আপনার মার্কেটিং থেকে কতজন সরাসরি ক্রেতা তৈরি হয়েছে। কতজন আসলেই পণ্য বা সেবাটি নিয়েছেন। এই কেপিআই এর উপর ভিত্তি করে মার্কেটিং টেকনিক কতটা কাজে লাগছে এবং কতটুকু লাভ লোকসান হচ্ছে এর সবই হিসাব করা যায়, তাই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইন্ডিকেটর।

৯) সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজ র‍্যাঙ্কিং (SERP)

এটা মূলত SEO টুল এর সাথে সম্পর্কিত। এর মানে হচ্ছে আপনার ওয়েবসাইট বা পেজ সার্চ ইঞ্জিনে কততম অবস্থানে আছে। সাধারণত এনগেজিং কন্টেন্ট আর ভালো মানের ওয়েবসাইটগুলো র‍্যাঙ্কিং এ উপরের দিকে থাকে। আপনার ওয়েবসাইট বা পেজ উপরের দিকে থাকা মানে মানুষ এটা খুঁজে পাবে তাড়াতাড়ি। ক্লিকরেট আর এনগেজমেন্ট রেট ভালো মানের থাকবে। এটির জন্য ওয়েবসাইটে ভালো কী ওয়ার্ড ও কন্টেন্ট রাখতে হবে। এছাড়াও স্পিড ও পারফরম্যান্স, ওয়েবসাইটে বাগস বা ভাইরাস আছে কিনা, অ্যাড চালু আছে কিনা এসব ব্যাপারও লক্ষ্য রাখতে হবে, তবেই আপনার মার্কেটিং স্ট্র‍্যাটেজি কাজে লাগবে।

SERP চেক করতে আপনি সফটওয়্যারের সাহায্য নিতে পারেন, সফটওয়্যারে প্রতিদিন কারা এবং কয়বার ভিজিট করছেন, কতজন ওয়েবসাইট স্লো বা অ্যাড এর কারণে ঢোকার সাথে সাথেই বের হয়ে যাচ্ছেন, কতজন আসলেই আপনার অফার করা সার্ভিস নিচ্ছেন এসব তথ্য রেকর্ড হয়ে থাকবে, আপনি পরে এসব সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাবেন এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

১০) ভিডিও ভিউকাউন্ট

এটা মূলত যারা ইউটিউব বা অন্যান্য ভিডিও শেয়ার করার প্ল্যাটফর্মগুলোয় ভিডিওর মাধ্যমে মার্কেটিং করেন তাদের জন্য। ভিডিওর ভিউকাউন্ট হচ্ছে ওয়েবসাইটের মতই গ্রাহকের এনগেজমেন্ট কাউন্ট। কতজন প্রতিদিন ভিডিও দেখছেন, কতজন প্রথম কয়েকমিনিট বা সেকেন্ড দেখে চলে যাচ্ছেন, কতজন দেখছেন না সপ্তাহে একবারও এ সমস্ত তথ্যের হিসাব রাখা এবং সে অনুযায়ী মার্কেটিং স্ট্র‍্যাটেজি পরিবর্তন বা উন্নত করাই হচ্ছে এই কেপিআই এর উদ্দেশ্য।

ভিডিও মার্কেটিং বর্তমানে ইউটিউব, ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রাম রিলসের অবদানে বেশ জনপ্রিয়। এমনকি অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে ভিডিও মার্কেটিং ব্যবহার করে ক্রেতা আকৃষ্ট করতে পেরেছেন, তাদের বিক্রি বেড়েছে, মানুষ তাদের কন্টেন্ট পছন্দ করেছে এবং দিনশেষে তাদের ব্যবসাকে অনেকটাই সফল বলা যায়। বর্তমানের ডিজিটাল সময়ে ভিডিও মার্কেটিং করা এবং তার কেপিআই অ্যানালাইজ করে সঠিকভাবে মার্কেটিং করা হতে পারে আপনার ব্যবসা বা কাজের জন্য টার্নিং পয়েন্ট। ভিডিওর এনগেজমেন্টে বোঝা যায় কতটি ভিউ হল, কয়টা লাইক/হার্ট অথবা কমেন্ট পড়ল এই হিসেবে।

কেপিআই এর সাহায্যে মার্কেটিং পলিসি ঠিক আছে কিনা বোঝার উপায়

১১) কাস্টমার লাইফটাইম ভ্যালু

কাস্টমার লাইফটাইম ভ্যালু মানে হচ্ছে একজন কাস্টমার থেকে তার জীবদ্দশায় একটা কোম্পানি কতটুকু লাভ পাচ্ছে। বর্তমানে বিজনেসে “রিপিট কাস্টমার” কথাটা খুব পরিচিত। রিপিট কাস্টমার হচ্ছেন সেইসব কাস্টমার যারা একবার পণ্যে বা সেবায় সন্তুষ্ট হলে বার বার ফেরত আসেন। আর এই কেপিআই সেই কাস্টমারদের নিয়েই। কারণ একজন কাস্টমার যখন আপনার রিপিট কাস্টমার হয়েই গেছেন, তখন তার জন্য মার্কেটিং কস্ট কমে যাবে, এবং সেই বেঁচে যাওয়া খরচ আপনি অন্য কোনো সেক্টরে কাজে লাগাতে পারবেন।

এছাড়াও এ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে আপনি কীভাবে একবার বা দুইবার সেবা নেয়া কাস্টমারকে রিপিট কাস্টমার হিসেবে আকৃষ্ট করতে পারেন, কোন মার্কেটিং তাকে আকৃষ্ট করছে এবং কোনটির কারণে সে বিরক্ত হচ্ছে এসবও বুঝতে পারবেন। যেমন, অনলাইনে কোনো একটা দোকান যাদের থেকে আমি একবার সার্ভিস নিয়েছি, তারা যদি রোজ রোজ কল করে বা মেসেজ দিয়ে আমার কাছে প্রমোশন করতে থাকে, ব্যাপারটায় আমি বিরক্ত হবো। কিন্তু তাদেরই যদি রিসিটের সাথে একটা লিফলেট থাকে প্রতিদিনের অফারগুলো সম্পর্কে, তাহলে হয়ত আমি অবসর সময়ে সেটি দেখব এবং তাদের রিপিট কাস্টমার হতেও পারি!

কেপিআই ট্র‍্যাক করার মাধ্যমে একটি বিজনেস হয়ে উঠতে পারে একটি সফল বিজনেস। এর মাধ্যমে আপনি এমন সব তথ্য পাবেন যা আপনার বিজনেসকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করবে এবং ফলাফলে আপনার বিজনেস আরো বৃদ্ধি পাবে। বিশ্বের অনেকগুলো বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই কেপিআই ব্যবহার করে সফলতার মুখ দেখেছেন, তাই নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে আরো সফল করে তুলতে মার্কেটিং কেপিআই ট্র‍্যাকিং এবং তা থেকে পাওয়া ডাটা এনালাইজ করে আপনিও সফল হতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *