বিশ্বের বিখ্যাত কয়েকটি লাইব্রেরি সম্পর্কে দারুণ ও চমৎকার কিছু তথ্য

বিশ্ববিখ্যাত সবকিছুর প্রতিই আমাদের আলাদা এক ধরনের আগ্রহ রয়েছে। যেমন- জায়গা, খাবার, পোশাক, চিত্রকর্ম ,গান ইত্যাদি। বইপড়ুয়ারা আবার জানতে চান বিখ্যাত বই, লেখক এমনকি লাইব্রেরি সম্পর্কেও। লাইব্রেরিও যে এতটা জনপ্রিয় হতে পারে, মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে সেটা বইপড়ুয়াদের কাছে জিজ্ঞেস করলেই বোঝা যায়। লাইব্রেরিতে পিনপতন নীরবতায় মানুষ বইয়ের সাগরে ডুব দেয়, এক অনন্য বিশালতায় হারিয়ে যায়। কারণ সত্যিকার অর্থেই জ্ঞানের কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। লাইব্রেরি মূলত জ্ঞানের ভান্ডারস্বরূপ। বলা হয়ে থাকে, একটি জাতির লাইব্রেরি যতবেশি সমৃদ্ধ, সে জাতি ততবেশি সমৃদ্ধ। তাই আজকের লেখাটি লাইব্রেরি নিয়েই। বিশ্বের বিখ্যাত কয়েকটি লাইব্রেরি সম্পর্কে আজ জানবো আমরা, যেগুলো কি না বইপড়ুয়াদের জন্য তীর্থস্থানই বলা চলে।

বিশ্বের বিখ্যাত কয়েকটি লাইব্রেরি

আমেরিকান লাইব্রেরি অব কংগ্রেস   

এখন পর্যন্ত এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় লাইব্রেরি। আমেরিকার সবচেয়ে প্রাচীনতম এই লাইব্রেরিটি অবস্থিত ওয়াশিংটন ডিসিতে। শুধু বই নয়, এর পাশাপাশি এতে রয়েছে বহুবছর ধরে সংরক্ষিত বিভিন্ন পান্ডুলিপি, মানচিত্র, রেকর্ডিংস। ধারণা করা হয়, প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ ১২ হাজার ৭৫০ টি বই এখানে রয়েছে। এটি স্থাপিত হয় ১৮০০ সালে। যখন প্রেসিডেন্ট জন অ্যাডামস সরকারি কার্যাবলী ফিলাডেলফিয়া থেকে ওয়াশিংটনে নিয়ে আসেন তখন থেকেই মূলত এর যাত্রা শুরু। ক্যাপিটাল প্রাসাদের ঠিক পাশেই তিনটি বিশাল বিল্ডিং নিয়ে চলছে এই লাইব্রেরিটি। বিল্ডিংগুলোর কিছু স্মৃতিবহুল নামও রয়েছে। প্রথমটির নাম টমাস জেফারসন বিল্ডিং, দ্বিতীয়টি ম্যাডিসন মেমোরিয়াল বিল্ডিং এবং সর্বশেষটি হলো জন অ্যাডামস বিল্ডিং।

সাধারণত প্রত্যেক বিল্ডিংয়েই রাস্তার উপর দিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকে, কিন্তু মজার ব্যাপার হলো অতিরিক্ত মানুষের ভীড় কমাতে রাস্তার নিচ দিয়ে সুড়ঙ্গ পথেও এই লাইব্রেরিটিতে যাওয়া যায়। এই লাইব্রেরিটির বর্তমান প্রধান ব্যক্তি হলেন ক্লারা হেইডেন। তিনি বিশ্বের এই জায়ান্ট লাইব্রেরির ১৪ তম লাইব্রেরিয়ান। বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তিনি মনোনীত হন ২০১৬ সালে। কংগ্রেস লাইব্রেরির ইতিহাসে তিনিই প্রথম আফ্রিকান আমেরিকান, আবার প্রথম নারী হিসেবেও এই লাইব্রেরির দায়িত্ব পালন করছেন। তার পড়াশোনার বিষয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সেখান থেকেই তিনি এমন পেশায় আসার ব্যাপারে আগ্রহ পেয়েছিলেন। এরপর তিনি লাইব্রেরি সায়েন্স নিয়ে মাস্টার্স ও ডক্টরেটও করেছেন। এই লাইব্রেরিতে একজন লাইব্রেরিয়ান সর্বোচ্চ ১০ বছর দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকতে পারবেন।

২২০ বছরের পুরোনো এই লাইব্রেরি গড়ে ওঠার পেছনে রয়েছে বিশাল ইতিহাস। ফিলাডেলফেলিয়া থেকে যখন এই লাইব্রেরি ওয়াশিংটন ডিসিতে স্থানান্তর করা হয় তখন কংগ্রেসদের বই পড়ার জন্য কোনো লাইব্রেরি না থাকায় শুধুমাত্র তাদের পড়ার জন্য মাত্র ৫ হাজার ডলার ব্যয় করে এই লাইব্রেরি তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে সংগ্রহের তালিকা বড় হতে হতে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

আমেরিকান লাইব্রেরি অব কংগ্রেস

 

ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব কানাডা

এটি পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম লাইব্রেরি। এটি শুধুমাত্র একটি সাধারণ লাইব্রেরিই নয়, বরং এটি কানাডার কেন্দ্রীয় সরকারের একটি বিভাগ বা অংশও। কানাডার ইতিহাসের সাথে সম্পর্কিত দলিল, বইপত্র, লেখা, ছবি সংগ্রহের দায়িত্ব রয়েছে এই লাইব্রেরির উপর। কানাডিয়ান সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এখানে পাওয়া যায়। তাই সম্পূর্ণভাবেই এটিকে কানাডিয়ান সরকারের সম্পত্তি বলা যায়। প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ ৬ হাজার ৫৪ টি বই রয়েছে এর সংগ্রহে। ন্যাশনাল লাইব্রেরি হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি কানাডা সম্পর্কিত কানাডিয়ানদের প্রকাশিত সাহিত্য ও বাদ্যযন্ত্রের একটি বিশাল অংশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কারণ এটি এখন কানাডিয়ান আর্কাইভ এর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশই বলা যায়। ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে, কানাডিয়ান প্রকাশকের একটি বিস্তৃত রেকর্ড হিসেবে সবার কাছে তুলে ধরার জন্য এবং সংগ্রহটিতে এক্সেসের জন্য একটি ডাটাবেসও তৈরি করা হয়েছে। লাইব্রেরি ও আর্কাইভের ব্যাপারে এই লাইব্রেরিটি দেশের অন্য বা প্রাক্তন লাইব্রেরিগুলোকেও লাইব্রেরির ক্লায়েন্ট সার্ভিস অফার করে থাকে।

ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব চায়না

এশিয়ায় বাণিজ্যিকভাবে যেরকম চীন সবার থেকে এগিয়ে, ঠিক তেমনই লাইব্রেরির ক্ষেত্রেও তারা সবার থেকে এগিয়ে। এশিয়ার সবচেয়ে বড় লাইব্রেরিটি চীনেই অবস্থিত। ধারণা করা হয়, চীনা সাহিত্যের সবচেয়ে বেশি সংগ্রহ পাওয়া যাবে এই লাইব্রেরিতেই। বইয়ের পাশাপাশি এর সংগ্রহে রয়েছে প্রায় ১২ লাখ সাময়িকী। তাছাড়া ২ কোটি ৮৯ লাখ ৮০ হাজার ৭৭৭টি বই তো রয়েছেই। লাইব্রেরিটি চীনের রাজধানী বেইজিং এ স্থাপিত হয় ১৯০৯ সালে। চীনের ইতিহাস ও সাহিত্য চর্চায় বহুবছর থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এই লাইব্রেরিটি। চীনা সাহিত্য ও ঐতিহাসিক নথিপত্রের জন্য পুরো বিশ্বজুড়েই এটি সুপরিচিত। প্রায় ২৮০,০০০ বর্গমিটার জুড়ে এর বিশাল এলাকা। চীনের এই ন্যাশনাল লাইব্রেরিটি হলো একটি জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান, যা ওই দেশের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয় দ্বারা পরিচালিত। এখানে প্রায় ১২৩টি ভাষায় আইটেম রয়েছে এবং সেগুলো মুদ্রণ ও ডিজিটাল উভয়ই। তাছাড়া বই, পান্ডুলিপি, জার্নাল, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন, শব্দ এবং সঙ্গীত রেকর্ডিং, ভিডিও, প্লে-স্ক্রিপ্ট, পেটেন্ট, ডাটাবেস, মানচিত্র, স্ট্যাম্প, প্রিন্ট, অঙ্কন ইত্যাদিরও বিশাল সংগ্রহ আছে এখানে।

২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত, এই লাইব্রেরির সংগ্রহে ৪১ মিলিয়নেরও বেশি ভলিউম রয়েছে এবং প্রতি বছর ১ মিলিয়ন ভলিউম বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডিজিটাল সম্পদের মোট পরিমাণ ১০০০TB ছাড়িয়েছে এবং প্রতি বছর ১০০TB হারে বাড়ছে। এই লাইব্রেরিতে প্রবেশের জন্য অবশ্যই লাইব্রেরি কার্ড থাকতে হবে। আপনি যদি বিদেশি হন, আপনি নিজের পাসপোর্ট দেখিয়েই সেখানে ঢুকতে পারবেন। লাইব্রেরিটির নাম অনেকবার পরিবর্তন করা হলেও পরবর্তীতে সর্বশেষ এই নাম রাখা হয়। লাইব্রেরিটি তিনটি এলাকা নিয়ে গঠিত। সেগুলো হলো উত্তর এলাকা, দক্ষিণ এলাকা ও প্রাচীন বিভাগ। আকারের দিক থেকে হিসেব করলে এটিকে পৃথিবীর বৃহত্তম লাইব্রেরিগুলোর একটি হিসেবে ধরে নেয়া হয়। লাইব্রেরির ভিতরে স্যুভনিওরের দোকানের অভাব নেই। এই দোকানগুলোতে লাগেজ ট্যাগ থেকে শুরু করে ওরাকল শিলালিপির প্রাচীন অক্ষরগুলির সাথে খোদাই করা বিশেষ বুকমার্ক পর্যন্ত আছে।

ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব চায়না

 

ডয়েচে বিবলিওথিক

প্রতিষ্ঠাকালে মূলত জার্মান ভাষার প্রকাশনাগুলা সংগ্রহ করাই এই লাইব্রেরির কাজ ছিলো, যেহেতু জার্মানরা এখনো সব ক্ষেত্রে তাদের নিজেদের ভাষাই ব্যবহার করেন। তবে পাশাপাশি অন্য ভাষার সাহিত্যও সংগ্রহ করা হয়। এটি জার্মানির জাতীয় লাইব্রেরি। এটি পৃথিবীর বড় লাইব্রেরিগুলোর মধ্যে অন্যতম। ১৯১২ সালে এই লাইব্রেরিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিখ্যাত এই লাইব্রেরির সংগ্রহশালায় রয়েছে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৮৭ হাজার ১০টি বই ও অন্যান্য প্রকাশনা। ১৯৯০ সালে জার্মান পুনর্মিলনের পর পুরোদমে এখানে পান্ডুলিপি সব গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যের অংশগুলো সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এখানে সংগ্রহের তালিকা অনেক বড় হলেও সর্বশেষ ২০১১ সালে প্রায় ২৭ মিলিয়ন মিডিয়া কপির মধ্যে ১০ মিলিয়ন ফ্রাঙ্কফুর্টে সংরক্ষণাগারভুক্ত করা হয়েছিলো। ১৯৯৭ সালে নতুন লাইব্রেরি ভবনের জন্য ২৫০ মিলিয়ন ডিএম খরচ হয়েছিলো। Adickesallee 1 এ বিল্ডিংটির একটি প্রধান ব্যবহারযোগ্য এলাকা রয়েছে ৪৭ হাজার বর্গ মিটারের। এর তিনটি ভূগর্ভস্থ তলায় ১৮ মিলিয়ন মিডিয়ার জন্য প্রায় ৩১ হাজার বর্গমিটারের একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ম্যাগাজিন এলাকা রয়েছে। ভূগর্ভস্থ মেঝেগুলো ভূগর্ভস্থ জলে অবস্থিত এবং একটি অতিরিক্ত বাহ্যিক শীলসহ একটি সাদা ট্যাঙ্ক হিসেবে ডিজাইন করা হয়েছে। বর্তমানে এখানে ৩৬০টি রিডিং রুম রয়েছে।

ব্রিটিশ লাইব্রেরি

ব্রিটিশরা সবসময়ই সংস্কৃতি চর্চায় অন্যদের থেকে এগিয়ে। এই লাইব্রেরিটি যুক্তরাজ্যের জাতীয় লাইব্রেরি। সাহিত্য চর্চায় ব্রিটিশরা শুধুমাত্র তাদের সাহিত্য সংগ্রহে বসে নেই, এই লাইব্রেরিতে পাওয়া যাবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভাষার সাহিত্যের সব সংগ্রহ। প্রায় সব ভাষার ১ কোটি ৫৫ লাখ বই এই লাইব্রেরিতে রয়েছে। সব মিলিয়ে সংগ্রহের সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৩৫ লাখ। প্রতিবছর ব্রিটিশ লাইব্রেরির সংগ্রহশালায় যুক্ত হয় প্রায় ৩০ লাখ বই। তাছাড়াও এটি পৃথিবীর বিখ্যাত গবেষণা লাইব্রেরিগুলোর একটি। ১৭৫৩ সালে লন্ডনে এটি স্থাপিত হয়।

লাইব্রেরিটিতে মুদ্রণ ও ডিজিটাল দুইভাবেই পান্ডুলিপি, জার্নাল, সংবাদপত্র, পত্রিকা, রেকর্ডিং, ভিডিও, ডাটাবেস, মানচিত্র ইত্যাদি জিনিস সংগৃহীত রয়েছে। ব্রিটিশ গবেষণার বড় একটি সাপোর্ট এই লাইব্রেরিটি। প্রতিবছর প্রায় ৩ মিলিয়ন নতুন বই এখানে যুক্ত করা হয়, যা শেলফের প্রায় ৯.৫ কিলোমিটার জায়গা দখল করে। লাইব্রেরিটি ১৯৭৩ এর আগে ব্রিটিশ জাদুঘরের অংশ ছিলো। লাইব্রেরিটি এখন লন্ডনের সেন্ট প্যানক্রাসের ইউস্টন রোডের উত্তর দিকে ইউস্টন রেলওয়ে স্টেশনের এবং সেন্ট প্যানক্রাস রেলওয়ে স্টেশনের মাঝামাঝি বিশেষভাবে বানানো একটি ভবনে অবস্থিত। সেন্ট প্যানক্রাস ভবনটি আনুষ্ঠানিকভাবে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে দিয়ে ১৯৯৮ সালের জুন মাসে খোলা হয় এবং এটির স্থাপত্য ও ইতিহাসের জন্য “ব্যতিক্রমী আগ্রহের” প্রথম শ্রেণীর ভবন হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়।

ব্রিটিশ লাইব্রেরি

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি

এটিকে শুধুমাত্র লাইব্রেরি বলা যায় না। এটি একটি সিস্টেমেটিক স্ট্রাকচার, যার আরো ৯০টি শাখা রয়েছে। এটি আমেরিকার সবচেয়ে পুরোনো লাইব্রেরি চেইন বা সিস্টেমের একটি। পাশাপাশি সবচেয়ে পুরোনো একাডেমিক লাইব্রেরিগুলোরও একটি। ১৬৩৮ সালে এটি স্থাপিত হয় এবং প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ বই এখানে রয়েছে। আমেরিকান কালচার ছাড়াও বিভিন্ন কালচারের বই এখানে পাওয়া যায় এবং একাডেমিক রিসার্চগুলোও এখানে সংগ্রহ করা হয়। এর সংগ্রহে প্রায় ২০ মিলিয়ন ভলিউম, ৪০০ মিলিয়ন পান্ডুলিপি, ১০ মিলিয়ন ফটোগ্রাফ এবং ১ মিলিয়ন মানচিত্র রয়েছে। লাইব্রেরি অব কংগ্রেস এবং বোস্টন পাবলিক লাইব্রেরির পরে হার্ভার্ড লাইব্রেরিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় বৃহত্তম সংগ্রহ রয়েছে। এটি উপকরণ সংখ্যার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম বৃহত্তম গ্রন্থাগার। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্থা হোয়াইটহেড, এবং কলা ও বিজ্ঞান অনুষদের লাইব্রেরিয়ান হিসেবে রয়েছেন রয় ই. লারসেন। বর্তমানে এখানে কর্মচারী রয়েছে প্রায় ৮০০ জন। লাইব্রেরিটি বর্তমান হার্ভার্ডের অনুমোদিত সংস্থাগুলির জন্য উন্মুক্ত এবং কিছু অনুষ্ঠান ও স্থান জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। হার্ভার্ড ব্যবস্থার মধ্যে সবচেয়ে স্বীকৃত ভবন হলো হার্ভার্ড ইয়ার্ডে অবস্থিত উইডেনার লাইব্রেরি।

রাশিয়ান স্টেট লাইব্রেরি

রুশ সাহিত্য পুরো পৃথিবী জুড়েই বিখ্যাত। রুশ গল্প পৃথিবীর সাহিত্য চর্চার একটি বেশ ভালো অনুপ্রেরণার জায়গা। সেই রুশরাও কিন্তু সংগ্রহশালার দিক থেকে পিছিয়ে নেই। রাশিয়ার মস্কোতে অবস্থিত এই লাইব্রেরিটি রাশিয়ার জাতীয় লাইব্রেরি। একইসাথে এটি রাশিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন ও জনপ্রিয় লাইব্রেরিগুলোর একটি। ১৭৯৫ সালে নির্মাণ করা হয় এটি। প্রায় ১ কোটি ৪৭ লাখ ৫০ হাজারের বেশি বিশাল সংগ্রহের সমাহার রয়েছে এখানে। ২০১৭ সালে এর হোল্ডিং ৪৭ মিলিয়ন ইউনিট ক্রস করেছে। এই লাইব্রেরিটি সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। লাইব্রেরির সাপ্তাহিক ছুটি রবিবার। এটি একটা ফেডারেল লাইব্রেরি, যা রাশিয়ার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় দ্বারা পরিচালিত হয় এবং সমস্ত আর্থিক চাহিদাও এখান থেকেই পূরণ করা হয়। লাইব্রেরির নিয়মিত ব্যবহারকারী হতে হলে কমপক্ষে ১৪ বছর বয়সী হতে হবে এবং বৈধ আইডি কার্ড বা পাসপোর্ট থাকতে হবে। ২০১৯ এর তথ্যানুযায়ী এর সদস্য ৩৮৭,০০০ জনের মতো। বর্তমান পরিচালক হলেন ভাদিম দুদা এবং মোট কর্মচারী রয়েছে ১৬৯৯ জন। লাইব্রেরিটিতে বিশাল স্থাপত্যশিল্পের বেশ কয়েকটি ভবন রয়েছে। ২০১২ সালের দিকে প্রায় ২৭৫ কিলোমিটারের বেশি তাক ছিলো, যার মধ্যে ১৭ মিলিয়নেরও বেশি বই এবং সিরিয়াল ভলিউম, ১৩ মিলিয়ন ম্যাগাজিন, ৩৭০ হাজার মিউজিক স্কোর এবং সাউন্ড রেকর্ড, ১৫০,০০০ মানচিত্র ছিল। বিশ্বের ২৪৭টি ভাষায় আইটেম রয়েছে, বিদেশি অংশ সমগ্র সংগ্রহের প্রায় ২৯ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করে। ২০১৭ সালে ৩৬০টিরও বেশি ভাষা কভার করা হয়েছে।

রাশিয়ান স্টেট লাইব্রেরি

 

লাইব্রেরি নিয়ে বইপড়ুয়াদের মধ্যে আগ্রহের শেষ নেই। বিশ্বের বড় বড় লাইব্রেরি কোনগুলো, কতগুলো বই সেখানে আছে, কেন সেগুলো বিখ্যাত এমন নানা প্রশ্ন থাকে তাদের মাঝে। আজ জানিয়ে দিলাম বিশ্বের বিখ্যাত লাইব্রেরিগুলো সম্পর্কে। আশা করি কিছুটা হলেও আপনাদের ভিন্ন কিছু তথ্য জানাতে পেরেছি। এগুলোর মধ্যে কোন লাইব্রেরি সম্পর্কে আপনি জানতেন?

ছবিঃ সংগৃহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *