একটা ব্যবসা বা নতুন উদ্যোগ শুরু করতে গিয়ে বেশিরভাগ মানুষই প্রথমে যে ভুলটা করেন সেটা হচ্ছে প্রাইসিং ঠিকভাবে না করা। এই একটা জিনিস আপনার ব্যবসাকে একইসাথে গড়ে তুলতে বা ধসিয়ে দিতে পারে। আপনার বিজনেসের প্রাইসিং স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণ করবে মার্কেটে আপনার প্রোডাক্টের সার্ভিস আর স্ট্যান্ডার্ড। প্রাইসিং করার আগে ও পরে কী করবেন, কীভাবেই বা প্রাইসিং সেট করবেন, সেটা নিয়েই আমাদের আজকের আলোচনা।
প্রাইসিং করার আগে যা জরুরি
মার্কেট রিসার্চ
মার্কেটে একটা নতুন প্রোডাক্ট লঞ্চ করার আগে অবশ্যই গভীরভাবে মার্কেট রিসার্চ করতে হবে। মার্কেট রিসার্চ মানে হচ্ছে একটা নির্দিষ্ট মার্কেট (এ ক্ষেত্রে আপনার প্রোডাক্ট এর মার্কেট) সম্পর্কে, তার ক্রেতা, কম্পিটেটর বিজনেস, সমজাতীয় অন্যান্য প্রোডাক্টের দাম ও মান এসব সম্পর্কে তথ্য গ্রহণ ও বিশ্লেষণ করা। এটি আপনাকে আপনার প্রোডাক্ট এর তুলনামূলক মার্কেট বুঝতে এবং সে অনুযায়ী প্রমোশন ও প্রাইসিং করতে সাহায্য করবে।
কাস্টমারের সম্পর্কে জানা
আপনার প্রোডাক্টের কাস্টমার কারা হবেন, তাদের প্রয়োজন, চাহিদা, পছন্দ, আর্থিক অবস্থা এসব আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। সে অনুযায়ী আপনি পরে আপনার প্রোডাক্টের প্রাইসিং করবেন। যেমন ধরা যাক, আপনি নতুন একটা কসমেটিক আনছেন, তার মূল্য ধরলেন ২৫০০+ , কিন্তু আপনার টার্গেট অডিয়েন্স হচ্ছে ১৩-২০ বছর বয়সের কিশোরী-তরুণীরা। সেক্ষেত্রে ধরেই রাখা যায় আপনার পণ্য বিক্রির সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়। কারণ এ বয়সীরা সাধারণত এই দামে একটা কসমেটিক আইটেম কিনতে আগ্রহী হবে না, যদি সেটা কোনো ধনী এলাকায় না হয়। তাই, প্রাইসিং করার সময় কাস্টমারের কথা মাথায় রাখা জরুরি।
কস্ট ও মার্জিন এনালাইসিস
আপনার বিজনেস থেকে আপনি কতটা প্রফিট মার্জিন তুলবেন, এটা আপনার আগে থেকে আন্দাজ থাকতে হবে। এরপর আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বাজারজাত করতে সবকিছু মিলিয়ে কত খরচ হচ্ছে, সে অনুযায়ী প্রফিট সহ প্রাইসিং করতে হবে। এর মধ্যে পড়ছে প্যাকেজিং, প্রমোশন, ম্যানুফ্যাকচারিং, লেবার কস্ট, কোনো প্রোডাক্ট এই প্রসেসে নষ্ট হলে তার কস্ট ইত্যাদি সবকিছুই। অন্তত আপনার প্রাইসিং এ যাতে সব খরচ কভার করে আপনার নির্দিষ্ট প্রফিট হাতে থাকে, সে অনুযায়ী প্রাইসিং সেট করতে হবে। সবশেষে, একটা উপযুক্ত প্রাইসিং মডেল বেছে নিন আপনার বিজনেস এর জন্য!
বিজনেসের প্রাইসিং স্ট্র্যাটেজি
বিভিন্ন বিজনেস তাদের প্রাইসিং এ বিভিন্ন স্ট্র্যাটেজি অনুসরণ করে, আপনি আপনার সুবিধামত একটি বা কয়েকটির কম্বিনেশন করতে পারেন। সব ধরনের পণ্যে সব প্রাইসিং কাজ করে না, আবার একেক বিজনেস এর একেক রকম কস্টিং বা ম্যানেজমেন্ট থাকে, সে অনুযায়ী প্রাইসিং সেট হয়। আমরা এখানে বেশ কমন কিছু প্রাইসিং স্ট্র্যাটেজি নিয়ে কথা বলব।
১) পেনেট্রেশন প্রাইসিং
পেনেট্রেশন প্রাইসিং এমন একটা স্ট্র্যাটেজি, যেটা আপনার বিজনেসকে মার্কেটে খুব দ্রুত জনপ্রিয় করে তুলতে পারে। তবে লম্বা সময় এটা চালানো যায় না, এতে বিজনেসের লোকসানের ভয় থাকে। এর মানে হচ্ছে, প্রাথমিকভাবে বিশেষ ছাড়ে বা প্রমোশনাল প্রাইসে প্রোডাক্ট অফার করা। প্রায়ই দেখতে পাবেন বিভিন্ন শপে বা সুপারমার্কেটে প্রমোশনাল অফার বা লঞ্চিং ডিসকাউন্টে বেশ কিছু প্রোডাক্ট বিক্রি করা হয়। এই প্রাইসটা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য কোম্পানির সেম প্রোডাক্টের তুলনায় কম থাকে। এতে কাস্টমাররা এই ব্র্যান্ড সম্পর্কে জানতে পারে ও তুলনামূলক কম প্রাইসে প্রোডাক্ট কিনে ব্যবহার করে দেখতে পারে, পরে পছন্দ হলে ফুল প্রাইসে কিনতেও আপত্তি থাকে না। এই প্রাইসিং এর সুবিধা ও অসুবিধা দুইই আছে। প্রাথমিকভাবে এই স্ট্র্যাটেজি আপনার বিজনেসকে কম্পিটিশনে এগিয়ে দেবে। ক্রেতার কাছে নিজস্ব জায়গা তৈরি করতে সাহায্য করবে। এই পদ্ধতিতে প্রথম প্রথম আপনাকে কিছু লোকসান দিতে হতে পারে। আবার ক্রেতা কম দামে অভ্যস্ত হয়ে গেলে পরে বেশি দামে কিনতে না চাইতেও পারেন।
২) ইকোনমি প্রাইসিং
এই ধরনের প্রাইসিং সাধারণত প্রাইস সেনসিটিভ কাস্টমারের জন্য। যেসব কাস্টমার একটা ভালো বার্গেইন এর আশায় থাকেন তাদেরকে মাথায় রেখেই এই প্রাইসিং সেট করা হয়। এই স্ট্র্যাটেজিতে সব কস্ট ধরে মিনিমাম প্রফিট রেখে প্রাইসিং সেট করা হয়। উদাহরণ হিসেবে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রেডি টু কুক ফ্রোজেন ফুডের কথা বলা যায়। তৈরি খাবার থেকে ফ্রোজেন ফুডের দাম কম, কাস্টমারের সেটা বাসায় নিয়ে কেবল গরম করে বা তেলে ভেজে নিতে হয়। এতে আপাতদৃষ্টিতে এক্সট্রা রিসোর্স খরচ না হওয়ায় কাস্টমারের কাছে একটা ভালো বার্গেইন হিসেবে পরিচিতি পাওয়া যায়। এই স্ট্র্যাটেজিতে প্রাইস কাস্টমারের মনে ভালো প্রভাব ফেলে, কাস্টমার একবার অভ্যস্ত হলে আপনার ব্র্যান্ডকেই বেছে নেবে পরবর্তীতেও, এই গ্যারান্টি পাওয়া যায়। তবে ছোট বিজনেসের জন্য এভাবে বিজনেস অপারেট করা কষ্টকর। বড় বিজনেসগুলো মাস প্রডাকশন করে কস্টিং কমিয়ে আনতে পারলেও ছোট বিজনেসের ক্ষেত্রে সেটা কঠিন, তাই এই স্ট্র্যাটেজিটা একটু রিস্কি।
৩) প্রিমিয়াম প্রাইসিং
এই ধরনের বিজনেসের প্রাইসিং স্ট্র্যাটেজি কসমেটিকস, ফ্যাশন আইটেম ও বিলাসবহুল দ্রব্যের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এর মানে হচ্ছে অন্যান্য কম্পিটেটরদের তুলনায় বেশি দামে আপনার প্রোডাক্ট বাজারজাত করা। এই ধরনের প্রাইসিং মূলত অপেক্ষাকৃত ধনী ক্রেতাদের জন্য করা হয়। এর মধ্যে বেশ কিছু ফ্যাক্টর কাজ করে, যেমন- আফটার সেলস সার্ভিস, প্রোডাক্টের এক্সক্লুসিভিটি, প্রিমিয়াম লুকস আর প্যাকেজিং ইত্যাদি। উদাহরণ হিসেবে আমরা লাক্সারি ঘড়ির ব্র্যান্ড রোলেক্স দেখতে পারি। রোলেক্স প্রায় ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবসা করছে, তাদের ঘড়িগুলো যেমন এক্সক্লুসিভ তেমনই দামি, কিন্তু নির্দিষ্ট কাস্টমার বেস থাকায় তাদের ব্যবসা এখনো ভালো চলছে। ঘড়ির মতো একটা সাধারণ প্রোডাক্টে মূল্যবান ম্যাটেরিয়াল ও স্পেশাল এবং স্কিলড ক্রাফটম্যানশিপ, আকর্ষণীয় ডিজাইন ইত্যাদির মাধ্যমে করে তোলা হয়েছে লাক্সারি প্রোডাক্ট। এ ধরনের প্রাইসিং এ প্রফিট মার্জিন তোলা তুলনামূলকভাবে সোজা, কারণ কম সংখ্যক কাস্টমারেই প্রফিট উঠে আসে। তবে এভাবে প্রাইসিং করে সফল হতে হলে মার্কেটিংও সেভাবেই করতে হবে, লাক্সারি ব্র্যান্ড এর ক্রেতাদের কাছে পৌছাতে হবে। প্যাকিং, শপ, সার্ভিস সবকিছুতেই থাকতে হবে সেই প্রিমিয়াম সার্ভিস।
৪) কম্পিটেটর প্রাইসিং
এই স্ট্র্যাটেজিতে মূলত মার্কেটে অন্যান্য কম্পিটেটরদের ফলো করা হয় এবং তাদের সাথে মিল রেখে তেমন বা তার চেয়ে কমে প্রাইসিং করা হয়। এতে প্রায়ই ক্যাশব্যাক বা ডিস্কাউন্ট এর মতো অফার থাকে। যেমন, সেম প্রোডাক্ট যদি অন্য কোনো কোম্পানি কম মূল্যে বাজারে আনে, তবে প্রোডাক্টের উপর সাময়িক ডিসকাউন্ট দিয়ে সেই কোম্পানির সাথে মিল রাখা হয়, যাতে কাস্টমার আগের প্রোডাক্টই বেছে নেয়। এই প্রাইসিং স্ট্র্যাটেজিতে কাস্টমারের ট্রাস্ট ও লয়ালটি বজায় থাকে, দামের কারণে অন্য ব্র্যান্ড বেছে নেয় না। তবে সবসময় কম্পিটেটর এর প্রাইস চেক করা, ঘন ঘন প্রাইসিং পালটানো, লাভ কমানো এসব সমস্যার কারণ হতে পারে এই স্ট্র্যাটেজিতে।
৫) প্রাইস স্কিমিং
এই স্ট্র্যাটেজিতে পণ্য যখন নতুন রিলিজ হয় তখন তার দাম বেশি থাকে, পরে আস্তে আস্তে কমে আসে। এটা সাধারণত টেকনোলজি যেমন মোবাইল ফোন, গেমিং কনসোল, কম্পিউটার এক্সেসরি এসব প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়। এরকম প্রাইসিং করার পিছনে কারণ হচ্ছে টেকনোলজির ক্ষেত্রে নিত্যনতুন আবিষ্কার হতেই থাকে, মার্কেটেও আসতে থাকে। তখন পুরনো ভার্সন আর নতুন ভার্সন সমান দামে কাস্টমার কিনতে চাইবে না। তাই পুরনো ভার্সনের দাম সময়ের সাথে সাথে কমতে থাকে। টেকনোলজির ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রাইসিং মাস প্রোডাকশনকে ট্রিগার করতে পারে, যে কারণে কম্পিটেটররাও সেম টেকনোলজি কিনে নেয় এবং ইনিশিয়াল কস্টিং কমে আসে। তবে প্রাথমিক দাম খুব বেশি হলে ক্রেতা তা কিনতে নাও চাইতে পারে, এর ফলে প্রোজেক্ট পড়তে পারে ক্ষতির মুখে।
৬) প্রাইস এংকরিং
প্রাইস এংকরিং স্ট্র্যাটেজি হচ্ছে প্রিমিয়াম প্রাইসের প্রোডাক্ট আর তার ইকোনমি প্রাইসের অল্টারনেটিভ পাশাপাশি রাখা। এই স্ট্র্যাটেজি কাস্টমারের মনে দুই ধরনের প্রভাব ফেলে। যেমন- কিছু কাস্টমার কম দামি অল্টারনেটিভকে দামের তুলনায় বেশি লাভ ভেবে সেটাই কিনে নেন। কিছু কাস্টমার প্রিমিয়াম কোয়ালিটির প্রোডাক্টকে ইকোনমির সাথে তুলনা করে বেশি ভালো বা লাক্সারি হিসেবে কিনে নেন। এই স্ট্র্যাটেজিতে বিভিন্ন রেঞ্জ এর প্রোডাক্ট একইসাথে থাকে বলে কাস্টমার নিজের সুবিধা মতো বেছে নিতে পারেন। যেমন- বাটার স্পেশাল রেড কালেকশন, লাক্স এর স্পেশাল পারফিউম কালেকশন, আড়ং এর বিভিন্ন রেঞ্জ এর শাড়ি একসাথে রাখা ইত্যাদি। এই স্ট্র্যাটেজি সব ধরনের কাস্টমারকেই আকৃষ্ট করে, কারণ সবার জন্যই কিছু না কিছু রয়েছে। তবে এভাবে একবার প্রাইসিং সেট করলে ভবিষ্যতে চেঞ্জ করা কঠিন হয়, কারণ কাস্টমার সেভাবেই আশা করে থাকেন।
৭) সাইকোলজি প্রাইসিং
এই প্রাইসিং স্ট্র্যাটেজিতে পণ্যের বা কাস্টমারের যুক্তির উপর না, বরং তাদের আবেগ অনুভূতির উপর সাইকোলজির ব্যবহার করে প্রাইসিং করা হয়। আপনি প্রায়ই খেয়াল করে থাকবেন বিভিন্ন মূল্যছাড় অথবা অফারে ৪৯, ৯৯, ৯৯৯, ১১ এ ধরনের প্রাইসিং করা হয়। এটি সাইকোলজি প্রাইসিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রচলিত উদাহরণ। সাইকোলজি বলে, ৯.৯৯, ৯৮.৯৯, ২১.৭৫ এ ধরনের প্রাইসিং কাস্টমারকে আকৃষ্ট করে এবং ফুল প্রাইসের চেয়ে কম দামে প্রোডাক্ট পাচ্ছেন এমন অনুভূতি দেয়। আবার ১০০০, ১৫০, ৭৫০ এমন সম্পূর্ণ ও রাউন্ডেড নাম্বারে প্রাইসিং প্রোডাক্ট ও তার কোয়ালিটির প্রতি ভরসা দেয়। এ কারণে সাধারণ স্টোরগুলো নন রাউন্ডেড প্রাইসিং বেশি ও লাক্সারি স্টোরগুলো সেল এর সময় ছাড়া রাউন্ডেড প্রাইসিং বেশি করে। এই স্ট্র্যাটেজিতে যে সামান্য প্রাইসিং এর নড়াচড়া হয় তা বড় আকারে কোনো প্রভাব ফেলে না। তবে এই প্রাইসিং অনুকরণ করাও সোজা। কম্পিটেটর কোম্পানিগুলো সহজেই এই স্ট্র্যাটেজি ফলো করতে পারে।
৮) বান্ডেল বা প্যাকেজ প্রাইসিং
নাম থেকেই বোঝা যায়, এই স্ট্র্যাটেজি হচ্ছে বান্ডেল বা প্যাকেজে প্রাইসিং। এই প্রাইসিং এ কয়েকটা প্রোডাক্ট একসাথে প্যাকেজ বা বান্ডেল আকারে প্রাইসিং করা হয় যার মোট মূল্য সবগুলো প্রোডাক্টের আলাদা আলাদা মোট মূল্যের চেয়ে কম হয়। এটা সাধারণত জমে থাকা বা কম সেল হওয়া প্রোডাক্ট জনপ্রিয় প্রোডাক্টের সাথে সেল দিয়ে দেবার জন্য করা হয়। যেমন- মাঝে মাঝে সুপার শপে দেখা যায় বাই ওয়ান গেট ওয়ান বা বাই টু গেট ওয়ান, অথবা বিভিন্ন মেকআপ আইটেম একসাথে প্যাকেজ বা বান্ডেল করে রাখা হয়। অথবা ভ্যালু প্যাক হিসেবে প্যাক করা হয়- এগুলো বান্ডেল প্রাইসিং এর উদাহরণ। এই স্ট্র্যাটেজিতে জমে থাকা প্রোডাক্ট সেল হয়ে যায়, কাস্টমার স্যাটিফ্যাকশনও আসে ভালো, কিন্তু প্রত্যাশিত দামের চেয়ে কম দামে প্রোডাক্ট ছাড়াই প্রফিট মার্জিন কম হয়।
৯) ক্যাপটিভ প্রোডাক্ট প্রাইসিং
এটা মূলত “রেজর আর রেজর ব্লেড বিজনেস” এর মতো। এই স্ট্র্যাটেজিতে একটা বেস প্রোডাক্ট থাকে, যার মূল্য কম থাকে, কিন্তু এর পরিপূরক পণ্যের প্রাইস মার্ক আপ থাকে বেশি। যেমন- একটা রেজর এর প্রাইস মার্ক আপ কম, কিন্তু রেজর কিনলে রেজর ব্লেড এর দরকার হতেই থাকে, সেই রেজর ব্লেড এ প্রফিট মার্জিন থাকে বেশি। কাস্টমাররা রিপ্লেসেবল প্রোডাক্ট বার বার কেনে, তাই প্রফিট ভালো হয়। এই স্ট্র্যাটেজিতে লয়াল কাস্টমার বেস ভালো থাকে, তবে কম্পিটেটররা সহজেই রিপ্লেসমেন্ট প্রোডাক্ট আনতে পারে।
১০) হোলসেল-রিটেইল প্রাইসিং
এই স্ট্র্যাটেজি মূলত ব্যবহার করা হয় মাস প্রডাকশন এর ক্ষেত্রে, তবে অনেক ছোট উদ্যোক্তারাও মাঝে মাঝে এই অপশন দিয়ে থাকেন। হোলসেল-রিটেইল প্রাইসিং হচ্ছে নির্দিষ্ট অ্যামাউন্টের পণ্যের উপর একটা পাইকারি মূল্য কাস্টমারকে অফার করা। বিশ্বের সবচেয়ে বড় হোলসেল শপিং প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে আলিবাবা, যেখানে ভেন্ডররা ১-১০০০০০ বা তার ও বেশি পণ্যের অর্ডার নিয়ে থাকে। এক পিস পণ্য যে দামে দেয়া হয়, বেশি পরিমাণে নিলে সেটা অনেক কম দাম হয়, কারণ মাস প্রোডাকশন এর ফলে প্রোডাকশন খরচ কমে আসে। এই প্রাইসিং এর ক্ষেত্রে হোলসেল দামে মিনিমাম একটা কোয়ান্টিটির অর্ডার নিতে হয়, না হলে লাভে পোষায় না। এটা মূলত যারা পণ্য নিয়ে রিসেলিং করেন সেইসব কাস্টমারদের জন্য।
উপরের সবগুলো স্ট্র্যাটেজিই বহুল ব্যবহৃত, ছোট ছোট কোম্পানি থেকে শুরু করে বড় বড় ব্র্যান্ড সবাই নিজেদের সুবিধামত স্ট্র্যাটেজি বেছে নিচ্ছে এবং সফলও হচ্ছে। আপনিও বেছে নিতে পারেন আপনার বিজনেসের জন্য সুইটেবল স্ট্র্যাটেজি, একটি বা কয়েকটি মিলিয়ে।